নিজস্ব প্রতিনিধি , বর্তমান ত্রিপুরা, 26/07/2025
নয়া দিল্লি, ২৬ জুলাই — প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মালদ্বীপ সফরের সময় শুক্রবার ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই সমঝোতা স্মারক (MoU) উভয় দেশের মধ্যে ছয়টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অংশ হিসেবে স্বাক্ষরিত হয় এবং এটি মূলত টেকসই টুনা মাছ ধরার শিল্প, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ, মাছ প্রক্রিয়াকরণ এবং জলজ কৃষির (aquaculture) উন্নয়নে দৃষ্টিপাত করে।
এই চুক্তিটি ভারতের মৎস্য বিভাগ এবং মালদ্বীপের মৎস্য ও মহাসাগরীয় সম্পদ মন্ত্রণালয়-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মাধ্যমে দুটি দেশ যৌথভাবে মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় কাজ করবে এবং মাছ-ভিত্তিক ইকো-ট্যুরিজম বা পরিবেশবান্ধব পর্যটনকেও উৎসাহিত করা হবে।
মূল উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য:
১. টেকসই টুনা মাছ ধরার প্রসার:
টুনা মাছ মালদ্বীপের একটি প্রধান রপ্তানিযোগ্য পণ্য। এই চুক্তির ফলে ভারত ও মালদ্বীপ যৌথভাবে টুনা মাছ ধরার ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ও পরিবেশ-বান্ধব কৌশল প্রয়োগ করবে। এতে মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত হবে।
- মাছ প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের উন্নয়ন:
মালদ্বীপের মাছ প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা বাড়াতে ভারত কারিগরি সহায়তা ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সহযোগিতা দেবে। এর ফলে মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রে মালদ্বীপের সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। - জলজ কৃষির সম্প্রসারণ (Aquaculture):
চুক্তির অংশ হিসেবে ভারত ও মালদ্বীপ মৎস্যচাষ বা জলজ কৃষিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যৌথভাবে গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কর্মসূচি চালাবে। এর মাধ্যমে পুষ্টিকর খাবারের উৎস এবং কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। - গভীর সমুদ্র মৎস্য আহরণে সুযোগ:
চুক্তির ফলে ভারতীয় মৎস্যজীবীরা মালদ্বীপের জলসীমায় গভীর সমুদ্রে নিয়ন্ত্রিত ও টেকসইভাবে মাছ ধরার সুযোগ পাবে, যা ভারতের সামুদ্রিক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। - ফিশারিজ-ভিত্তিক ইকো-ট্যুরিজম:
মাছ ধরার সঙ্গে সম্পর্কিত পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন সম্প্রসারণের দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হবে এবং পর্যটকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতার সুযোগ তৈরি হবে।
কূটনৈতিক গুরুত্ব:
এই চুক্তিটি ভারত ও মালদ্বীপের দীর্ঘস্থায়ী মৈত্রী ও সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উভয় দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব এই চুক্তির মাধ্যমে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
উপসংহার:
এই মৎস্য চুক্তি শুধু দুটি দেশের অর্থনীতিক উন্নয়নেই নয়, বরং সমুদ্রসম্পদের টেকসই ব্যবহারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মাছ ধরার প্রযুক্তি, প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানি ক্ষেত্রের উন্নয়নের পাশাপাশি, এটি পরিবেশ-সচেতন ও দায়িত্বশীল মৎস্য ব্যবস্থাপনাকে উৎসাহিত করবে। ভারতের ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ নীতির আওতায় মালদ্বীপের সঙ্গে এই ধরনের সহযোগিতা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
You said:
include in this as a win in foreign diplomacy of india as maldives changes its position from anti india to pro india mindset
ChatGPT said:
ভারত-মালদ্বীপ মৎস্য চুক্তি: টেকসই টুনা শিল্প ও জলজ কৃষিতে সহযোগিতার পাশাপাশি ভারতের কূটনৈতিক জয়
নয়া দিল্লি, ২৬ জুলাই — প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মালদ্বীপ সফরের সময় ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক মৎস্য সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। শুক্রবার স্বাক্ষরিত এই সমঝোতা স্মারক (MoU) ছয়টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অংশ হিসেবে গৃহীত হয়েছে, যা শুধুমাত্র মৎস্য শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নয়, বরং ভারতের পররাষ্ট্রনীতির দিক থেকেও একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই চুক্তি ভারতের মৎস্য বিভাগ এবং মালদ্বীপের মৎস্য ও মহাসাগরীয় সম্পদ মন্ত্রণালয়-এর মধ্যে সম্পাদিত হয়। মূল লক্ষ্য হলো — টেকসই টুনা ও গভীর সমুদ্র মৎস্য আহরণ, মাছ প্রক্রিয়াকরণ ও একুয়াকালচারের উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটনের প্রসার।
চুক্তির মূল দিকনির্দেশনা:
১. টেকসই টুনা মাছ ধরার প্রসার ও প্রযুক্তি বিনিময়
মালদ্বীপের অন্যতম অর্থনৈতিক স্তম্ভ টুনা মাছ ধরার শিল্প। এই চুক্তির মাধ্যমে ভারত আধুনিক ও পরিবেশসম্মত মাছ ধরার প্রযুক্তি মালদ্বীপের সঙ্গে ভাগ করে নেবে, যা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে।
২. মাছ প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানিতে সহায়তা
মালদ্বীপের মাছ প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে আরও উন্নত করে গ্লোবাল মার্কেটে প্রতিযোগিতামূলক করা হবে। ভারতীয় প্রযুক্তি ও দক্ষতা এই উন্নয়নে সহায়ক হবে।
৩. জলজ কৃষির (Aquaculture) সম্প্রসারণ
জলজ কৃষিতে যৌথ গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উভয় দেশ কাজ করবে। এতে পুষ্টির উৎস, কর্মসংস্থান এবং স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে।
৪. গভীর সমুদ্র মৎস্য আহরণে ভারতীয় প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি
চুক্তির আওতায় ভারতীয় মাছ ধরার জাহাজসমূহ নির্ধারিতভাবে মালদ্বীপের গভীর সমুদ্র অঞ্চলে টুনা ও অন্যান্য মৎস্য আহরণ করতে পারবে। এটি ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা ও সামুদ্রিক সম্পদের ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করবে।
৫. ইকো-ট্যুরিজম ও স্থানীয় জীবিকার উন্নয়ন
মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে পরিবেশবান্ধব পর্যটনের নতুন দিগন্ত। এটি স্থানীয় জনগণের জীবিকায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ভারতের পররাষ্ট্রনীতির সাফল্য
এই চুক্তি শুধু অর্থনৈতিক বা শিল্প উন্নয়নের নয়, বরং ভারতের কূটনৈতিক সাফল্যের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
সম্প্রতি মালদ্বীপে শাসন ক্ষমতায় থাকা প্রশাসন ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণার মাধ্যমে ভারতের বিরুদ্ধাচরণ করছিল এবং চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করছিল। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই সফর ও ফলপ্রসূ আলোচনার পর মালদ্বীপের অবস্থানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় এসেছে।
এই চুক্তির মাধ্যমে মালদ্বীপ সরকার ফের ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার বার্তা দিয়েছে। এটি ভারতের ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ ও ‘সাগর (SAGAR)’ নীতির সফল বাস্তবায়নের দিকনির্দেশক, যেখানে সমুদ্রপথে পারস্পরিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিবেশীদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়েছে।
উপসংহার:
ভারত-মালদ্বীপ মৎস্য চুক্তি কেবলমাত্র মাছ প্রক্রিয়াকরণ, টুনা আহরণ বা জলজ কৃষির প্রযুক্তি ভাগাভাগিতে সীমাবদ্ধ নয় — এটি একটি কৌশলগত কূটনৈতিক জয়। মালদ্বীপের পররাষ্ট্রনীতিতে ‘এন্টি-ইন্ডিয়া’ মনোভাব থেকে ‘প্রো-ইন্ডিয়া’ ঝোঁকে ফেরার এই পরিবর্তন দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির প্রমাণ।
এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে এবং সমুদ্রসম্পদ নির্ভর অর্থনৈতিক ও কৌশলগত অগ্রযাত্রার পথ প্রশস্ত করবে।
Leave a Reply